একটু চোখ বুলিয়ে নিন
শিরীর শাহী কামরা থেকে চিৎকার ভেসে এলো ।
ভেঙে খান খান হয়ে গেলো নিঃশব্দ রাতের স্তব্ধতা ।
তখন কামরায় শিরী ও তার লোক দুটির নিথর দেহ গড়াচ্ছিলো।
একদিকে ছিলো সত্যের আলোকছটা নিয়ে দীনে ইসলামের মশালবাহী মুজাহিদদের
দল। যারা অসত্যের আধারে নিমজ্জিত মানবজাতিকে উদ্ধারের জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে
ছিলো। অন্যদিকে ছিলো অসত্যের পূজারীরা ৷ আল্লাহর এক সৃষ্টি আগুণকে যারা পূজো
দিতো । দেবতা মনে করতো । আর সূর্যকে তারা খোদা বলে উপাসনা করতো ।
এদিকে ছিলো সত্যের শৌর্ষেবীর্যে তেজদীপ্ত এক কাফেলা । সারা দুনিয়ায় যারা
আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠার অটল হিম্মত নিয়ে বেরিয়েছিলো । যে হিম্মতকে দৃঢ় রাখতে গিয়ে
তাদের নিষ্পাপ প্রাণগুলো বিলিয়ে যাচ্ছিলো । অকাতরে আর এদিকে ছিলো একচ্ছত্র
ক্ষমতা আর সিংহাসনের তীব্র মোহে আক্রান্ত বস্তুবাদীরা। যে মোহ ও লোভ তাদের
পরস্পরকে প্রতিনিয়তই শক্র বানাচ্ছিলো।
একদিকে ছিলো অপ্রতিরোধ্য জযবা আর নির্মল আবেগের সর্বব্যাপী উচ্ছাস।
অন্যদিকে ছিলো সারা দুনিয়া তামা করে দেয়ার মতো যুদ্ধের বিশাল প্রস্তুতি । যুদ্ধ শক্তি,
অহংবোধ, দানবীয় ওঁদ্ধত্য এসবই ছিলো বাতিলের পৃজারীদের কজায়। কিন্তু এর পাশে
সত্যবাহকদের মনে হচ্ছিলো বিশাল মব্রুতে বিধ্বস্ত কোন কাফেলার মতোই ক্ষুত্র আর
জীর্ণ । পারসিকরা তখন এক লক্ষ বিশহাজার ফৌজের বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করে উক্ষিপ্ত
আগুনের মতো টগবগ করছিলো । আর মুসলিম ফৌজের সংখ্যা চল্লিশ হাজারও ছিলো না।
এছাড়াও পারসিকদের ঘোড়সওয়ার ফৌজই ছিলো বেশি। আর হাতি তো ছিলোই।
রদ্তম তখন ছিলো সাবাতে।
পারস্য সম্রাট ইয়াযদগিরদ একদিন তার কামরায় বসা ছিলো। তার চেহারা দেখে মনে
হচ্ছিলো সে কোন বিষয়ে দারুণ উদ্িগ্ন। তার মা পাশে বসে এক দৃষ্টিতে তার ছেলের দিকে
তাকিয়েছিলো । কিন্তু ইয়াযদগিরদের সেদিকে তাকানোর কোন সময় ছিলো না।
£ “বেটা ইযদী” – ইয়াযদগিরদের মা নাওরীন তাকে জিজ্ঞেস করলো- “কি চিন্তা
করছিস এত করে?’
£ “তুমি তো জানো মা – ইয়াযদগিরদ বললো- “আমি কি চিন্তা করছি তুমি তা
নিশ্চয় জানো । মসনদের এই গুরু দায়ি ছাড়া আর কি চিন্তাইবা করতে পারি আমি।
সালতানাতে ফারেসের বিপদের কথা চিন্তা করতে করতে আমার রাতের ঘ্বুমও হারাম
হয়ে গেছে।