বইয়ের নাম: দেখা না-দেখা
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
ধরণ: উপন্যাস
প্রকাশকাল: ১৯৯৯
হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী নাম। তাঁর রচনা, চরিত্র নির্মাণ, এবং গল্প বলার কৌশল সকল পাঠককে মুগ্ধ করে। ‘দেখা না-দেখা’ এমন একটি উপন্যাস যা শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, বরং একটি গভীর ভাবনা এবং অন্বেষণ। এটি হুমায়ূন আহমেদের অনেক গুণের মধ্যে একটি, যেখানে তিনি সাধারণ জীবনের আড়ালে অসাধারণ অনুভূতি এবং প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছেন।
কাহিনী:
‘দেখা না-দেখা’ উপন্যাসটির কাহিনী বেশ সাদামাটা, তবে এর গভীরতা ও মৌলিকতা একে অন্য রকম করে তোলে। কাহিনীর মূল চরিত্র সঞ্জয়, একজন সাধারণ মানুষ, যিনি হঠাৎ করে এক অদ্ভুত ঘটনার মধ্য দিয়ে জীবনের এক ভিন্ন পর্যায়ে চলে আসেন। কাহিনীটির মধ্যে বাস্তবতা, রোমান্স, এবং কিছু রহস্যপূর্ণ উপাদান রয়েছে। উপন্যাসের প্রাথমিক প্লটটি ভিন্ন ধরনের এক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জীবনকে দেখা, যেখানে বাস্তবতার সীমা এবং মানব মনস্তত্ত্বের মধ্যে সম্পর্ক উঠে আসে।
চরিত্র নির্মাণ:
হুমায়ূন আহমেদের লেখা বইগুলোতে চরিত্রের নির্মাণ বরাবরই শক্তিশালী। এই উপন্যাসেও সঞ্জয়, তার পরিবার, এবং অন্যান্য চরিত্রের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ও মানসিক অবস্থান পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। সঞ্জয়ের ভেতরের দ্বন্দ্ব এবং তাঁর জীবন দর্শনকে সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। লেখক চরিত্রদের মনের অন্দরমহলকে এমনভাবে চিত্রিত করেন, যা পাঠককে নিজের জীবনের নানা দিক বিবেচনা করতে বাধ্য করে।
থিম ও বার্তা:
এই উপন্যাসের একটি বড় থিম হলো মানব জীবনের রহস্য। আমরা কি জীবনের প্রতিটি ঘটনা বা সম্পর্ক বুঝে থাকি? কিভাবে একসাথে থাকা বা না থাকার মধ্যে এক অদৃশ্য বাঁধন তৈরি হয়? ‘দেখা না-দেখা’ একদিকে মানুষের মানসিক যন্ত্রণা, বিচ্ছিন্নতা এবং অস্তিত্বের সংকটের গল্প, অন্যদিকে জীবনের গভীরে অনুসন্ধানের এক কাহিনী।
লেখনী শৈলী:
হুমায়ূন আহমেদের লেখনী অত্যন্ত সোজা এবং প্রাঞ্জল। তাঁর লেখার মধ্যে সরলতা এবং গভীরতা একত্রিত। ‘দেখা না-দেখা’ উপন্যাসের প্রতিটি লাইন এবং সংলাপ পাঠকের কাছে জীবন্ত হয়ে ওঠে। লেখক রহস্যময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পাশাপাশি, সেসব পরিস্থিতিতে চরিত্রগুলির অনুভূতিও অতি সূক্ষ্মভাবে চিত্রিত করেন। উপন্যাসের লেখনী একদিকে যেমন মধুর, অন্যদিকে তেমনি তীক্ষ্ণ এবং প্রাসঙ্গিক।
উপসংহার:
‘দেখা না-দেখা’ একটি উদাহরণস্বরূপ সাহিত্য কর্ম যা মানব জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি পাঠককে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি সেই পাঠকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যারা জীবনের রহস্য, সম্পর্কের জটিলতা এবং মানব মনস্তত্ত্বের গভীরে প্রবেশ করতে চান। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর অতি পরিচিত স্টাইলে গল্পটি লিখে পাঠককে চিন্তার জগতে নিয়ে যান। এই উপন্যাস শুধু একটি গল্প নয়, বরং একটি জীবনের সত্যি বাস্তবতা নিয়ে একটি গভীর চিন্তাধারা।
এই উপন্যাসটি পড়ে, পাঠক জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন, অথবা নতুন কিছু চিন্তা করার সুযোগ পাবেন। এটি বাংলা সাহিত্যের এক অনবদ্য রচনা, যা আজও পাঠকদের হৃদয়ে তার জায়গা ধরে রেখেছে।
আপনার কপি কিনুন রকমারি.কম থেকে–
এবং
বইটির ফ্রি সফট কপি ডাউনলোড করুন এখানে-