একটু চোখ বুলিয়ে নিন
এক
বেণী ঘোষাল মুখুষ্যেদের অন্দরের প্রাঙ্গণে পা দিয়াই সম্মুখে এক ঘ্রৌ়া রমণীকে পাইয়া
প্রশ্ন করিল, এই যে মাসি, রমা কই গাঃ
মাসি আহিক করিতেছিলেন, ইঙ্গিতে রান্নাঘর দেখাইয়া দিলেন। বেণী উঠিয়া আসিয়া
কিসের বড়দা?
বেণী কহিল, তারিণী খুড়োর শ্রান্ধের কথাটা বোন! রমেশ তো কাল এসে হাজির হয়েছে।
বাপের শ্রাদ্ধ খুব ঘটা করেই করবে বলে বোধ হচ্ছেযাবে না কি? বেণী ঈষৎ লজ্জিত হইয়া কহিল, সে তো জানি দিদি। আর যেই হোক, তোরা কিছুতেই সেখানে যাবিনে । তবে শুন্চি নাকি ছোড়া সমস্ত বাড়ি-বাড়ি নিজে গিয়ে বলবে-বজ্জাতি
বুদ্ধিতে সে তার বাপেরও ওপরে যায়যদি আনে. তা হলে কী বলবে? পুজানিরতা মাসির কর্ণরন্ধে এই অত্যন্ত রুচিকর দূলাদলির আলোচনা পৌছিবামাত্রই তিনি আহিক ফেলিয়া রাখিয়া উঠিয়া আদিলেন। বোনবির কথা শেষ না-হইতেই অততযুততপ্ত ব্যাটাকে এমনি বলাই বলব যে. বাছাধন জন্মে কখনো আর মুখুয্যেবাড়িতে মাথা গলাবে না তারিণী ঘোষালের ব্যাটা ঢুকবে নেমন্তন্ন করতে আমার বাড়িতে? আমি কিছুই ভুলিনি বেণীমাধব! তারিণী তার এই ছেলের সঙ্গেই আমীর রমার বিয়ে দিতে চেয়েছিল। তখনও মধ্যে আসবে--বুঝলে না বাবা বেণী! তা যখন হল না, তখন এ ভৈরব আচাধ্যিকে দিয়ে
কী-সব জপ-তপ, তুকতাক করিয়ে মায়ের কপালে আমার এমন আদুন ধরিয়ে দিলে যে,
ছ’মাস পেরুল না বাছার হাতের নোয়া মাথার সিঁদুর ঘুচে গেল। ছোটজাত হয়ে চায় কিনা
যদু মুখৃষ্যের মেয়েকে বৌ করতে! তেমনি হারামজাদার মরণ ও হয়েছে-ব্যাটার হাতের
আগুনটুকু পর্যন্ত পেলে না। ছোটজাতের মুখে আগুন! বলিয়া মাসি যেন কুস্তি শেষ করিয়া
হাপাইতে লাগিলেন । পুনঃপুন ছোটজাতের উল্লেখে বেণীর মুখ শ্লান হইয়া গিয়াছিল, কারণ
তারিণী ঘোষাল তাহারই খুড়া। রমা ইহা লক্ষ করিয়া মাসিকে তিরক্কারের কণ্ঠে কহিল,
কেন মাসি তুমি মানুষের জাত নিয়ে কথা কওঃ জাত তো আর কারুর হাতে-গড়া জিনিস
নয়? যে যেখানে জন্মেচে সেই তার ভালো ।
বেণী লজ্জিতভাবে একটুখনি হাসিয়া কহিল, না রমা, মাসি ঠিক কথাই বলেচেন। তুমি
কত বড় কুলীনের মেয়ে, তোমাকে কি আমরা ঘরে আনতে পারি বোন! ছোটখুড়োর