বই রিভিউ: “রক্ততৃষ্ণা” – অনীশ দাস অপু
(Raktotrishna – Anish Das Apu)
ভূমিকা:
অনীশ দাস অপুর “রক্ততৃষ্ণা” বাংলা থ্রিলার সাহিত্যের এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ও মর্মস্পর্শী সংযোজন, যা পাঠককে নিয়ে যায় এক আতঙ্ক ও রহস্যের গভীরে। এই উপন্যাসে মানব মনের অন্ধকার দিক, অপরাধবোধ ও প্রতিশোধের তীব্র তৃষ্ণাকে এমন নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা পাঠককে শেষ পাতা পর্যন্ত আটকে রাখবে। লেখক তার স্বাতন্ত্র্যসূচক শৈলীতে তৈরি করেছেন এক আন্তর্জাতিক মানের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার।
গল্পের সংক্ষিপ্তসার:
একটি ধারাবাহিক খুনের রহস্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় গল্পটি, যেখানে:
✔️ প্রতিটি খুনের স্থানে পাওয়া যায় রক্তে লিখিত বার্তা
✔ী প্রধান চরিত্র ডিটেকটিভ অর্ণবের ব্যক্তিগত ট্রমার সাথে জড়িয়ে যায় এই কেস
✔️ ১৫ বছর আগের এক অমীমাংসিত খুনের সাথে বর্তমানের যোগসূত্র
✔ী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এক খুনির মনের গহীনে ডুব দেয়ার চেষ্টা
✔️ চূড়ান্ত টুইস্ট যা পাঠককে স্তম্ভিত করে দেবে
চরিত্র বিশ্লেষণ:
অর্ণব রায়: তুখোড় ডিটেকটিভ যার অতীতের অমীমাংসিত গোপন আছে
ডাঃ প্রিয়ম্বদা: ফরেনসিক সাইকোলজিস্ট যিনি অর্ণবকে সাহায্য করেন
রক্তলেখক খুনি: রহস্যময় অপরাধী যার পরিচয় গল্পের শেষ পর্যন্ত অজানা
নীলাঞ্জনা: অর্ণবের মৃত স্ত্রী যার স্মৃতি তাকে তাড়া করে
লেখনী শৈলী:
অনীশ দাস অপুর অনন্য শৈলীতে প্রকাশ পেয়েছে:
✔️ অপরাধ দৃশ্যের রক্তহিম করা বর্ণনা
✔ী খুনির মানসিকতার গভীর বিশ্লেষণ
✔️ সময়ের সাথে ফ্ল্যাশব্যাকের নিখুঁত সমন্বয়
✔ী শেষ পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখার দক্ষতা
বইয়ের বিশেষত্ব:
✅ সাইকোপ্যাথিক খুনির মনের গভীরে প্রবেশ
✅ ডিটেকটিভ ও খুনির মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্বের চমৎকার চিত্রণ
✅ কলকাতার গলিঘুঁজে পরিবেশের জীবন্ত বর্ণনা
✅ প্রতিটি অধ্যায়ে নতুন রহস্যের জন্ম
সমালোচনা:
❌ কিছু দৃশ্যের বর্ণনা অতিরিক্ত রক্তাক্ত ও সংবেদনশীল পাঠকের জন্য অস্বস্তিকর
❌ শেষ টুইস্ট কিছু পাঠকের কাছে খানিকটা জটিল মনে হতে পারে
সারমর্ম:
“রক্ততৃষ্ণা” শুধু একটি ক্রাইম থ্রিলার নয়, এটি মানব মনের অন্ধকার গলিপথে এক নাড়াচাড়া দেওয়া অভিজ্ঞতা। অনীশ দাস অপু প্রমাণ করেছেন বাংলা ভাষায়ও বিশ্বমানের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার রচনা সম্ভব।
রেটিং: ৪.৭/৫
প্রস্তাবনা:
- থ্রিলার ও ক্রাইম ফিকশন প্রেমীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য
- যারা মানসিকভাবে জটিল চরিত্রের গল্প পছন্দ করেন
- সাইকোলজিক্যাল সাসপেন্স উপভোগ করেন এমন পাঠক
বিশেষ নোট:
এই বইটি পড়ার সময় পাঠক নিজেকে বারবার প্রশ্ন করবেন – “খুনি আসলে কে?”। প্রতিটি পাতায় লুকিয়ে আছে নতুন চমক, যা বইটি শেষ না করা পর্যন্ত ছাড়তে দেবে না। রাতে একা পড়তে গেলে বইটি হাতে নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে হতে পারে!
বইটির ফ্রি সফট কপি ডাউনলোড করুন এখানে-