অ্যামবুশ – মাসুদ রানা – কাজী আনোয়ার হোসেন (Ambush – Masud Rana By Kazi Anwar Hossain)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

“নাহ্‌, আমি দেখলাম না, অন্ধকারে টেলিসক্কোপটা রানার হাতে তুলে দিয়ে বলল
লেফটৌা্ট ইউরি রুত্ড তুমি দেখো তো মেজর

টেলিস্কোপ তুলে উত্তর তন্ন তন্ন করে খুঁজল রানা। সে-ও দেখল না
ওটাকে । চোখ থেকে টেলিস্কোপ নামিয়ে মাথা নাড়াল এদিক ওদিক।

“দিন তো দেখি, হাত বাড়ালেন কমান্ডার লিউ রাইকভ। রানার হাত থেকে
টেলিস্কোপটা নিলেন।

অতি-আধুনিক টেলিম্ফোপের ইনন্রারেড লেঙ্গের সামনে থেকে দূর হয়ে গেল
ঘন কালো অন্ধকার । লাফ দিয়ে কাছে চলে এল দিগন্ত রেখা ।

না, ধূসর দিগন্তের কোথাও নেই ওটা । ছোট-বড় বরফের চাই ছাড়া আর
কিছুই চোখে পড়ছে না।

‘আরও কাছে_না এলে দেখা যাবে না, চোখ থেকে টেলিস্কোপ নামাতে
নামাতে বললেন রাইকভ।

আকাশের অবস্থা খারাপ। ইতোমধ্যেই গতি অনেক বেড়ে গেছে
বাতাসের গর্জন ঠিক নয়, কেমন যেন করুণ একটা বিলাপধ্বনি। ঝড়ো বাতাসে
ঠাণ্ডার তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। লেলিনঘাদের সেইলে উঠে দাড়িয়ে আছে ওরা
তিনজন। ফারের মোটা পোশাকের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে ঠাণ্ডার সুচণ্তলো, হি হি
কাপুনি উঠে গেছে কয়েক মিনিটেই ।

চুপচাপ ভেসে আছে রাশান আযাটমিক সাবমেরিন লেনিন্প্রাদ। পশ্চিম পাশে
পাচশো গজ দূরে আবহ্া মত দেখা যাচ্ছে গ্রীনল্যাভ। কেমন যেন ভৌতিক । মেরু
সাগর আর ব্যাফিন উপসাগরের মাঝখানে বিশাল এক দ্বীপ এই খ্রীনল্যান্ড, আয়তন
আট লক্ষ চল্লিশ হাজার বর্গমাইল। উত্তর মেরুর মতই চিরবরফের রাজ্য এটাও,
কিন্তু মানুষের বসবাস আছে এখানে । আর্কটিক আর শ্রীনল্যান্ডের পরিবেশেও
পার্থক্য রয়েছে। দ্বীপের পাশে খোলা সাগর, ছোট-বড় বরফের চাই ভাসে
পানিতে । খরয্োতা নদীর যেমন তীর ধসে পড়ে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে ধস নামে
খ্রীনল্যান্তের ধার থেকেও । এই ধস বরফের পড়েই পানিতে আলোড়ন তুলে ভুবে
যায় টাইগুলো; কয়েক মুহূর্ত পরেই ভুস করে মাথা তোলে আবার। আবার ভোবে,
আবার ভাসে, এদিকে কাত হয়, ওদিকে কাত হয়, ধীরে ধীরে স্থির হয়ে আসে এক
সময়। তারপর বরফের যা ধর্ম_নিজের আয়তনের নয় ভাগের আট ভাগ পানির
তলায় ডুবিয়ে তেসে থাকে ৷

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top