Gabhi Brittanto by Ahmed Sofa

গাভী বিত্তান্ত – আহমেদ ছফা (Gabhi Brittanto by Ahmed Sofa)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

জুনায়েদের উপাচার্য পদে নিয়োগপ্রাপ্তির ঘটনাটি প্রমাণ করে দিল অব এই যুগেও আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ফ্যাকাল্টির সদস্যবৃন্দ আবু জ্বুনায়েদের উপাচার্ষের সিংহাসনে আরোহণের ব্যাপারটিকে নতুন বছরের সবচাইতে বড় মজার কাণ্ড বলে ব্যাখ্যা করলেন । আবু জুনায়েদ স্বয়ং বিস্মিত হয়েছেন সবচাইতে বেশি । আবু জুনায়েদের বেগম নুরুন্নাহার বানু খবরটি শোনার পর থেকে আগ্তাপাড়া মুরগির মতো চিৎকার করতে থাকলেন । তিনি সকলের কাছে বলে বেড়াতে লাগলেন যে তার ভাগ্যেই আবু জুনায়েদ এমন এক লাফে অত উচু জায়গায় উঠতে পারলেন । কিছু মানুষ অভিনন্দন জানাতে আনু আ 5ঘ৯ ওয়ার পর থেকে কী করে একের পর এক আবু জুনায়েদের ভাগের দুয়ার খুলে যাচ্ছে সে কথার পাচ কাহন করে বলেছেন। অমন ভাগ্যবতী বেগমের স্বামী না হলে, একদম বিনা দেন-দরবারে দেশের সবচাইতে প্রাচীন, সবচাইতে সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্ষের পদটি কী করে আবু জুনায়েদের ভাগ্যে ঝরে পড়তে পারে! যারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই মুখে কিছু না বললেও মনে
মনে মেনে নিতে দ্বিধা করেননি যে একমাত্র স্ত্রী ভাগ্যেই এরকম অঘটন ঘটতে পারে।

শিক্ষক হিসেবে আবু জুনায়েদ ছিলেন গোবেচারা ধরনের মানুষ । গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডিপার্টমেন্টে বা ডিপার্টমেন্টের বাইরে তার সঙ্গে কারো বিশেষ বন্ধুত্ব ছিল না। আর আবু জুনায়েদ স্বভাবের দিক দিয়ে এত নিরীহ ছিলেন যে তার অঙ্গে শক্রতা করলে অনেকে মনে করতেন, শক্রতা করার ক্ষমতাটির বাজে খরচ করা হবে । তাই গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ায় তার বন্ধু বা শত্রু কেউ ছিলেন না। আমাদের দেশের সবচাইতে প্রাচীন এবং সবচাইতে সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদাালয়টি হাল আমলে এমন এক রণচণ্তী চেহারা নিয়েছে । এখানে ধন প্রাণ নিয়ে বেচে থাকা মোটেই নিরাপদ নয়। এখানে যখন তখন মিছিলের গর্জন কানে ঝিম ধরিয়ে দেয়। দুই দলের বন্দুক যুদ্ধে যদি পুলিশ এসে পড়ে সেটা তখন তিন দলের বন্দুক যুদ্ধে বন্ধদের শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে, সেই দক্ষতা ঠাটারি বাজারের পেশাদার কশাইদেরও আয়ত্ত করতে অনেক সময় লাগবে । এখানে যত্রতত্র সে সকল বিস্ময় বালকের সাক্ষাৎ মিলবে যারা কিমিয়া শাস্ত্রের গোপন রহস্য জানার মতো করে সেই চমৎকার রোমাঞ্চকর তথ্যটি জেনে ফেলেছে । রিভলবারের ট্রিগারে………………………………..

লেখক সম্পর্কে

আহমদ ছফা
জন্ম: ১৯৪৩ সাল
গাছবাড়িয়া, চট্টগ্রাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রী বিজ্ঞানে এম. এ গবেষক, বাংলা একাডেমী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন । গল্প. উপন্যাস, কবিতা, গান, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী মিলিয়ে তিরিশটিরও অধিক গ্রন্থের প্রণেতা ।

সম্পাদকীয় উপদেষ্টা অধুনালুপ্ত দৈনিক গণকণ্ঠ ও প্রধান সম্পাদক সাপ্তাহিক উত্তরণ । বাংলাদেশ লেখক শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সভাপতি । একাধিক রচনা একাধিক ইউরোপীয় ভাষায় অনুবাদ হয়েছে এবং হওয়ার পথে। একাধিক সাহিত্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। জার্মানির ভেৎসলার শহরের মহাকবি গ্যোতের
স্থৃতিবিজড়িত কিয়োঙ্কটি (পানশালা) আহমদ ছফার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

 



বইটি কিনতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন



বইটি ডাউনলোড করতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top