Oishorjo by Samaresh Majumdar

ঐশ্বর্য – সমরেশ মজুমদার (Oishorjo By Samaresh Majumdar)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

গঙ্গার গা ঘেসে এই বিশাল বাড়িটি তৈরী করিয়েছিলেন রায়বাহাদুর কালীকিহ্কর রার। সিপাহী বিদ্রোহের সামান্য পরে যখন দেশের অস্থির রাজনৈতিক অবস্থার জটিলতায় ইংরেজ সরকার কিছুটা নাস্তানাবুদ, তখন একাট শিক্ষিত বাঙালী সম্প্রদায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন । কৃতজ্ঞতা না হোক দৌজন্যবশত পরবর্তী সময়ে ওই সম্প্রদার কিছুটা সুবিধে পেতে থাকলেন সরকারের কাছ থেকে । কালীকিক্কর রায়ের নামের আগে রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর যেন রাতারাতি কপাল খুলে গেল। খুব সামান্য অবস্থা থেকে সচ্ছলতার মধ্যে সংসারকে এনে না। বাংলাদেশের আর পাঁচ জন রাজা সাহেব বা রায়বাহাদুরের তুলনার তাঁকে বিভ্তহীনই বলা যার এ কথাটা শযনে স্বপনে তাঁকে পীড়া দিত। ইংরেজ সরকারের বদন্যতায় “দক্ষিণে বেশ কিছু একর জমি তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল কিন্তু সেখানে চাষ করাই ছিল মহা সমস্যা । অনুর্বর মাটি ফসল ফলাতে ছিল বেদম নারাজ ।

রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর চুঁচুড়ার গঙ্গার তীরে প্রায় সব সঞ্চয় নিঃশেৰ করে একটি বিশাল বাড়ি নিমাণি করলেন কুলগুরু বগলাচরণ ভট্টচার্ধের নির্দেশে । বস্তুত এরকম একটা অষ্টালিকা তৈরী না করতে পারলে সমাজে রায়বাহাদুর হিসেবে মযাদা রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল । কিন্তু সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে প্রাসাদ বানানোর ব্যাপারে
তাঁর খুবই দ্বিধা ছিল। বগলা ভট্টাচার্য তাঁকে অভর দিলেন, আস্তাবল না বানালে ঘোড়া আসবে না।

করেক বিঘে জমি নিয়ে গঙ্গার গা ঘেঁসে বাড়ী তৈরী হল । গেটের পরই বিরাট চৌকো বাঁধানো চাতাল। তার এ-পাশ ও-পাশে কয়েকটি উড়ন্ত পরীর মার্বেল মূর্তি ছড়ানো। চাতালের শেষেই দোতলা বাড়ির শুরু, লম্বা হয়ে অনেকটা দূর চলে গেছে । দোতলার প্রতিটি ঘরে যাতে গঙ্গার নির্মল বাতাস খেলা করতে পারে সেটা লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। ভেতরেও ছোট বাঁধানো উঠোন আছে ঝি চাকরের কাজকর্মের জন্য। দোতলায় বাবুবিবি, এক তলার দাসদাসীদের বসবাসের ব্যবস্থা ।

গৃহপ্রবেশের পর কালীকিক্করের স্ত্রীর ফাঁকা ফাঁকা লাগত এই বাড়ি। অথাভাবে দাসদাসী প্রায় নেই বললেই চলে, স্বামীকে তিনি চীহ্ষের গা ঘেসে এই বিশাল বাড়িটি তৈরী করিয়েছিলেন রায়বাহাদুর কালীকিহ্কর রার। সিপাহী বিদ্রোহের সামান্য পরে যখন দেশের অস্থির রাজনৈতিক অবস্থার জটিলতায় ইংরেজ সরকার কিছুটা নাস্তানাবুদ, তখন একাট শিক্ষিত বাঙালী সম্প্রদায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন । কৃতজ্ঞতা না হোক দৌজন্যবশত পরবর্তী সময়ে ওই সম্প্রদার কিছুটা সুবিধে পেতে থাকলেন সরকারের কাছ থেকে । কালীকিক্কর রায়ের নামের আগে রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর যেন রাতারাতি কপাল খুলে গেল।

খুব সামান্য অবস্থা থেকে সচ্ছলতার মধ্যে সংসারকে এনে না। বাংলাদেশের আর পাঁচ জন রাজা সাহেব বা রায়বাহাদুরের তুলনার তাঁকে বিভ্তহীনই বলা যার এ কথাটা শযনে স্বপনে তাঁকে পীড়া দিত। ইংরেজ সরকারের বদন্যতায় “দক্ষিণে বেশ কিছু একর জমি তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল কিন্তু সেখানে চাষ করাই ছিল মহা সমস্যা ।
অনুর্বর মাটি ফসল ফলাতে ছিল বেদম নারাজ ।

রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর চুঁচুড়ার গঙ্গার তীরে প্রায় সব সঞ্চয় নিঃশেৰ করে একটি বিশাল বাড়ি নিমাণি করলেন কুলগুরু বগলাচরণ ভট্টচার্ধের নির্দেশে । বস্তুত এরকম একটা অষ্টালিকা তৈরী না করতে পারলে সমাজে রায়বাহাদুর হিসেবে মযাদা রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল । কিন্তু সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে প্রাসাদ বানানোর ব্যাপারে
তাঁর খুবই দ্বিধা ছিল। বগলা ভট্টাচার্য তাঁকে অভর দিলেন, আস্তাবল না বানালে ঘোড়া আসবে না।

করেক বিঘে জমি নিয়ে গঙ্গার গা ঘেঁসে বাড়ী তৈরী হল । গেটের পরই বিরাট চৌকো বাঁধানো চাতাল। তার এ-পাশ ও-পাশে কয়েকটি উড়ন্ত পরীর মার্বেল মূর্তি ছড়ানো। চাতালের শেষেই দোতলা বাড়ির শুরু, লম্বা হয়ে অনেকটা দূর চলে গেছে । দোতলার প্রতিটি ঘরে যাতে গঙ্গার নির্মল বাতাস খেলা করতে পারে সেটা লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। ভেতরেও ছোট বাঁধানো উঠোন আছে ঝি চাকরের কাজকর্মের জন্য। দোতলায় বাবুবিবি, এক তলার দাসদাসীদের বসবাসের ব্যবস্থা ।

গৃহপ্রবেশের পর কালীকিক্করের স্ত্রীর ফাঁকা ফাঁকা লাগত এই বাড়ি। অথাভাবে দাসদাসী প্রায় নেই বললেই চলে, স্বামীকে তিনি চীহ্ষের গা ঘেসে এই বিশাল বাড়িটি তৈরী করিয়েছিলেন রায়বাহাদুর কালীকিহ্কর রার। সিপাহী বিদ্রোহের সামান্য পরে যখন দেশের অস্থির রাজনৈতিক অবস্থার জটিলতায় ইংরেজ সরকার কিছুটা নাস্তানাবুদ, তখন একাট শিক্ষিত বাঙালী সম্প্রদায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন । কৃতজ্ঞতা না হোক দৌজন্যবশত পরবর্তী সময়ে ওই সম্প্রদার কিছুটা সুবিধে পেতে থাকলেন সরকারের কাছ থেকে । কালীকিক্কর রায়ের নামের আগে রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর যেন রাতারাতি কপাল খুলে গেল।

খুব সামান্য অবস্থা থেকে সচ্ছলতার মধ্যে সংসারকে এনে না। বাংলাদেশের আর পাঁচ জন রাজা সাহেব বা রায়বাহাদুরের তুলনার তাঁকে বিভ্তহীনই বলা যার এ কথাটা শযনে স্বপনে তাঁকে পীড়া দিত। ইংরেজ সরকারের বদন্যতায় “দক্ষিণে বেশ কিছু একর জমি তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল কিন্তু সেখানে চাষ করাই ছিল মহা সমস্যা ।
অনুর্বর মাটি ফসল ফলাতে ছিল বেদম নারাজ ।

রায়বাহাদুর উপাধি পাওয়ার পর চুঁচুড়ার গঙ্গার তীরে প্রায় সব সঞ্চয় নিঃশেৰ করে একটি বিশাল বাড়ি নিমাণি করলেন কুলগুরু বগলাচরণ ভট্টচার্ধের নির্দেশে । বস্তুত এরকম একটা অষ্টালিকা তৈরী না করতে পারলে সমাজে রায়বাহাদুর হিসেবে মযাদা রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল । কিন্তু সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে প্রাসাদ বানানোর ব্যাপারে
তাঁর খুবই দ্বিধা ছিল। বগলা ভট্টাচার্য তাঁকে অভর দিলেন, আস্তাবল না বানালে ঘোড়া আসবে না।

করেক বিঘে জমি নিয়ে গঙ্গার গা ঘেঁসে বাড়ী তৈরী হল । গেটের পরই বিরাট চৌকো বাঁধানো চাতাল। তার এ-পাশ ও-পাশে কয়েকটি উড়ন্ত পরীর মার্বেল মূর্তি ছড়ানো। চাতালের শেষেই দোতলা বাড়ির শুরু, লম্বা হয়ে অনেকটা দূর চলে গেছে । দোতলার প্রতিটি ঘরে যাতে গঙ্গার নির্মল বাতাস খেলা করতে পারে সেটা লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। ভেতরেও ছোট বাঁধানো উঠোন আছে ঝি চাকরের কাজকর্মের জন্য। দোতলায় বাবুবিবি, এক তলার দাসদাসীদের বসবাসের ব্যবস্থা ।

লেখক সম্পর্কে

সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা-বাগানে। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র। কলকাতায় আসেন ১৯৬০-এ। শিক্ষা: স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স, পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ! লেখালেখি! প্রথমে গ্রুপ থিয়েটার করতেন। তারপর নাটক লিখতে গিয়ে গল্প লেখা। প্রথম
গল্প “দেশ’ পত্রিকায়, ১৯৬৭ সালে। প্রথম উপন্যাস “দৌড়”, ১৯৭৫-এ “দেশ’ পত্রিকায়। গ্রন্থ: দৌড়, এই আমি রেণু, উত্তরাধিকার, বন্দীনিবাস, বড় পাপ হে, উজান গঙ্গা, বাসভূমি, কালবেলা, কালপুরুষ এবং আর অনেক। সম্মান: ১৯৮২ সালের আনন্দ পুরস্কার তার যোগ্যতার স্বীকৃতি। এ ছাড়া “দৌড়’ চলচ্চিত্রের কাহিনীকার হিসাবে বি এফ জে এ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পুরস্কার। ১৯৮৪ সালে ‘কালবেলা; উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top