Poymonto by Shirshendu Mukhopadhyay

পয়মন্ত – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Poymonto by Shirshendu Mukhopadhyay)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

সীতাপুরে পাটের গুছি কিনতে এসে ভারী মন খারাপ হয়ে গেল গোপালের । আজকাল তার এটা হয় ৷ মনটা মাঝে মাঝে বড্ড খারাপ পাগে। পাটের কারবারী মদন বিষয়ী চেন! লোক । পাট ছাড়াও তার ‘চানাক আর ভূষিমালের ব্যবসা আছে । বেশ বড় আড়ত, না হোক পাঁচ সাতজন কর্মচারী খাছে। আজ সীতাপুরের হাট | তাই বিকিকিনি
গকেবারে জমজম করে হচ্ছে ৷ বাজার ঘিরেই হাট । রথতলা অবধি থিক |খক্* করছে মানুষ । এই হাটবাজার,জমজনমাটি ব্যাপাবস্তাপার গোপালের বড় ভালে লাগে।
‘গাজও যে লাগছিল না তা নয়। নদন বিষয়ী বললো, পাটের গুছি কিনবে তা অত তাড়া কিসের ? ওই চালের বস্তাটার ওপর চেপে বসে থাকো, জিরোও, হাড়ে একটু বাতাস
লাগ্ডক | জ্যাঠা তে খাটিয়ে জান কয়লা! করে দিয়েছে। এই ফুরসতে ‘গকটু জিরিয়ে নাও । দেখছো! তো৷ অবস্থা, চিটেগুড়ে যেন মাছি পড়েছে। ‘একট ফাক বুঝে দেবো খন ।
“থাটা একটু আতে লাগলো! গোপালের | সে যে একটু গবেট তা৷ সবাই নলে । নিজেই সে তেমন টের পায় না। আসলে কি, সে মানুষের মুখ ‘দখে মনের কথা টের পায় না, কোনোও বৃ্তান্তের ভিতরের পাঁচটা তার পাছে ধরা পড়ে না, আর সে পেটের কথা পেটে রাখতে পারে না। মাথাটায় তেমন ভাবনাঁচিন্তাও আসতে চায় না তার | এই যেমন, যখন সে পাউরুটি খায়, চায়ে ভিজিয়ে, তখন পাউরুটি কেমন চায়ে ডুব মেরে পাদামী রং ধরে আর কেমন পুচপুচে মিষ্টি হয় তা দেখতে দেখতে সে………………..

লেখক সম্পর্কে

জন্ম ২ নভেম্বর, ১৯৩৫ ।

দেশ__ঢাকা জেলার বিক্রমপুর ৷ মোক্তার দাদু আইন ব্যবসা জমাতে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহে । সেখানে ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে জন্ম । শৈশব কেটেছে নানা জায়গায় । পিতা রেলের চাকুরে | সেই সূত্রে এক যাযাবর জীবন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায় । এরপর বিহার, উত্তরবাংলা, পূর্ববাংলা, আসাম ।

পঞ্চাশ দশকের গোড়ায় কুচবিহার | মিশনারি স্কুল ও বোর্ডি-এর জীবন | ভিকটোরিয়া কলেজ থেকে আই-এ । কলকাতার কলেজ থেকে বি এ। স্নাতকোত্তর পড়াশুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে । স্কুল-শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু | এখন বৃত্তি-সাংবাদিকতা । আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত । ছাত্রজীবনের ম্যাগাজিনের গণ্ডী পেরিয়ে প্রথম গল্প-দেশ পাত্রকায় । প্রথম উপন্যাস “ঘুণপোকা? । “দেশ’ শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত | প্রথম কিশোর উপন্যাস__“মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ । কিশোর সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে ১৯৮৫ সালে পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার । ১৯৮৯ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদমি পুরস্কার । আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দুবার ।
খেলায় তাঁর উৎসাহ অদম্য । বকসিং, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস সম্পর্কে যেমন, আযাথলিটক্‌সেও তেমনই আগ্রহী । জীবনের এক সংকটময় মুহুর্তে তিনি
জীবনের প্রতি আস্থা ফিরে পান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সান্নিধ্যে এসে | নিরামিষাশী । ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য । তাঁর রচনাতেও ঘুরে-ফিরে আসে আধ্যাত্মিক অন্বেষণ । পাঠক হিসেবে সর্বপ্রাসী | ধর্মবিষয়ক গ্রন্থ প্রিয়, প্রিয় গ্রিলার এবং কল্পবিজ্ঞানও ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top