একটু চোখ বুলিয়ে নিন
বড় সাহেব ডেকেছেন। নয়নটাদ বড় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। বড় সাহেব বড় একটা কাউকে ডাকেন না। যাকে ডাকেন তার দুশ্চিন্তার কারণও থাকে। তিনটে তেইশ মিনিট আঠারো সেকেণ্ডে আাপয়েন্টমেন্ট, একটুও এদিক ওদিক হওয়ার উপায় নেই। এখন সাড়ে তিনটে বাজতে আর মিনিট পাঁচেক বাকি আছে। নয়নচাদ তার হাতের কাজকর্ম সব দ্রুত হাতে গুছিয়ে নিচ্ছিল। হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ায় আতকে উঠল সে। সকালে একটা পান খেয়েছিল, সেই পান এখনো গালে? হয়ে গ্যাছে! সর্বনাশ! বড় সাহেব পান খাওয়া একদম পছন্দ করেন না। নয়নচাদ বাথরুমে গিয়ে পান ফেলে মুখ ধুল, তারপর নিজের ওপর খারাপ নয়, সে বেশ লম্বা, স্বাস্থ্য ভাল, গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যাম, সে আজ ভাল করে দাত মেজেছে। আর তার পোশাকটাও মোটের গপর খারাপ নয়।
নয়নচাদ দুর্গানাম স্মরণ করে বড় সাহেবের ঘরের দিকে রওনা হল। সেই চাকরির ইণ্টারভিউয়ের সময় বড় সাহেবের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয় চাকরির চার বছর বাদে এই দ্বিতীয়বার, বুকটা বড় থরথর করছে। কোথায় যেন গণ্ডগোল করে ফেলেছে কাজে কে জানে!
লম্বা করিডোর তবে হাঁটতে হয় না। করিডোর নিজেই চলে, শুধু দাড়িয়ে থাকলেই হল। করিডোর এঁকেব্বেকে ওপরে উঠে এবং নিচে
নেমে অবশেষে আকাশখরের দিকে চলতে লাগল। আকাশঘরে সাওয়ার করিডোরটি ভারি মজার। চারদিক দারুণ কাচে মোড়া, যেদিকে তাকাও আকাশ, উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম সব…………………….
লেখক সম্পর্কে
জন্ম ২ নভেম্বর, ১৯৩৫ ।
দেশ__ঢাকা জেলার বিক্রমপুর ৷ মোক্তার দাদু আইন ব্যবসা জমাতে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহে । সেখানে ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে জন্ম । শৈশব কেটেছে নানা জায়গায় । পিতা রেলের চাকুরে | সেই সূত্রে এক যাযাবর জীবন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায় । এরপর বিহার, উত্তরবাংলা, পূর্ববাংলা, আসাম ।
পঞ্চাশ দশকের গোড়ায় কুচবিহার | মিশনারি স্কুল ও বোর্ডি-এর জীবন | ভিকটোরিয়া কলেজ থেকে আই-এ । কলকাতার কলেজ থেকে বি এ। স্নাতকোত্তর পড়াশুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে । স্কুল-শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু | এখন বৃত্তি-সাংবাদিকতা । আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত । ছাত্রজীবনের ম্যাগাজিনের গণ্ডী পেরিয়ে প্রথম গল্প-দেশ পাত্রকায় । প্রথম উপন্যাস “ঘুণপোকা? । “দেশ’ শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত | প্রথম কিশোর উপন্যাস__“মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ । কিশোর সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে ১৯৮৫ সালে পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার । ১৯৮৯ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদমি পুরস্কার । আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দুবার ।
খেলায় তাঁর উৎসাহ অদম্য । বকসিং, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস সম্পর্কে যেমন, আযাথলিটক্সেও তেমনই আগ্রহী । জীবনের এক সংকটময় মুহুর্তে তিনি
জীবনের প্রতি আস্থা ফিরে পান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সান্নিধ্যে এসে | নিরামিষাশী । ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য । তাঁর রচনাতেও ঘুরে-ফিরে আসে আধ্যাত্মিক অন্বেষণ । পাঠক হিসেবে সর্বপ্রাসী | ধর্মবিষয়ক গ্রন্থ প্রিয়, প্রিয় গ্রিলার এবং কল্পবিজ্ঞানও ।