Tondrabilas by Humayun Ahmed

তন্দ্রাবিলাস – হুমায়ুন আহমেদ (Tondra Bilas By Humayun Ahmed)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

ভোর বেলায় মানুষের মেজাজ মোটামুটি ভাল থাকে! বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খারাপ

হতে থাকে, বিকাল বেলায় মেজাজ সবচে বেশি খারাপ হয়, সন্ধ্যার পর আবার

ভাল হতে থাকে ৷ এটাই সাধারণ নিয়ম।

এখন সকাল এগারোটা, মেজাজের সাধারণ সুত্র মতে মিসির আলির মেজাজ

ভাল থাকার কথা। কিন্তু মিসির আলির মন এই মুহূর্তে যথেষ্টই খারাপ । তিনি বসার

ঘরে বেতের চেয়ারে পা তুলে বসে আছেন। তার ভূরু কুচকে আছে! তার মেজাজ

খারাপের দু’টি কারণের প্রথমটা হল__ একটা মাছি। অনেকক্ষণ থেকেই মাছিটা তার”

গায়ে বসার চেষ্টা করছে। সাধারণ মাছি না-_ নীল রঙের স্বাস্থ্যবান ডূমো মাছি। আম”

-কীঠালের সময় এই মাছিগুলিকে দেখা যায়। এখন শীতকাল-_ এই মাছি এল:

কোথেকে? মাছিটা তার গায়েই বার বার বসতে চাচ্ছে কেন? তাঁর সামনে বসে থাকা
মেয়েটির গায়ে কেন বসছে না?
মিসির আলির মেজাজ খারাপের দ্বিতীয় কারণ এই মেয়েটি। তার ইচ্ছা
করছে মেয়েটিকে একটা ধমক দেন। যদিও ধমক দেবার মত কোনও কারণ ঘটেনি।
মেয়েটি তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। দেখা করতে আসার অপরাধে কাউকে ধমক
দেয়া ষায় না। ধমক দেয়ার বদলে মিসির আলি শব্দ করে কাঁশলেন। প্রচন্ড শব্দে
কাশলে, কিংবা কুৎসিত শব্দে নাক ঝাড়লে মনের রাগ অনেকখানি কমে। মিসির
আলির কমল না বরং আরও যেন বাড়ল। মাছিটাও মনে হচ্ছে এই শব্দে উৎসাহ
পেয়েছে। এতক্ষণ গায়ে বসতে চাচ্ছিল এখন উড়ে ঠোঁটে বসতে চাচ্ছে। কি যন্ত্রণা!
স্যার, আমার নাম সায়রা বানু। সায়রা বানু নামটা কি আপনার মনে থাকবে?

লেখক সম্পর্কে

১৩ নভেম্বর মধ্যরাতে আমার জন্ম। সন
১৯৪৮। হ্যা মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে
গেছে। লেখালেখি করে ত্রিশ বছর পার
করলাম। আমি আনন্দিত, ক্রাঞ্খি এখনো
আমাকে স্পর্শ করে নি।
ধানমন্ডীর ১৮শ স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট
বাড়িতে কাটছে আমার দিবস-রজনা।
আমি কোথাও যাই না বলেই মাঝে মাঝে
আমার ফ্লাটে জম্পেস আড্ডা হয়। যে
রাতে আড্ডা থাকে না, আমি শাওনকে
নিয়ে ছবি দেখি।
জোছনা আমার আতি প্রিয় বিষয়। প্রতি
পূর্ণিমাতেই নৃহাশপল্পীতে যাই জোছনা .
দেখতে, সঙ্গে পুত্র নিষাদ, নিনিত এবং
তাদের মমতাময়ী মা। প্রবল জোছনা
আমার মধ্যে এক ধরনের হাহাকার তৈরি
করে। সেই হাহাকারের উৎস অনুসন্ধান
করেই জীবন পার করে দিলাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top