একটু চোখ বুলিয়ে নিন
১০ ফাল্গুন, ১৩২৯
নাটক
বসন্ত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উৎসর্গ
শ্রীমান কবি নজরুল ইসলাম
স্নেহভাজনেষু
রাজা । কবি!
কবি। কী মহারাজ ।
রাজা । আমি মন্ত্রণাসভা থেকে পালিয়ে এসেছি।
কবি। সৎকার্য করেছেন। কিন্তু মহারাজের এমন সুমতি হল কেন।
রাজা । বৎসর শেষ হয়ে এল, রাজকোষ শূন্যপ্রায়। মন্ত্রণাসভায় বসলেই সচিবরা আসেন তাঁদের নিজ বিভাগের জন্যে টাকা দাবি করতে । কাজেই পলায়ন ছাড়া গতি নেই।
কবি। এতে উপকার হবে।
রাজা । কার উপকার হবে।
কবি। রাজ্যের।
রাজা। সেকি কথা!
কবি। রাজা মাঝে-মাঝে সরে দাড়ালে প্রজারা রাজত্ব করবার অবকাশ পায়।
রাজা । তার অর্থ কী হল।
কবি। রাজার অর্থ যখন শূন্যে এসে ঠেকে প্রজা তখন নিজের অর্থ খুজে বের করে, তাতেই তার রক্ষা ।
রাজা । কবি, তোমার কথাগুলো বাকা ঠেকছে। মন্ত্রণাসভা ছেড়ে এসেছি, আবার তোমার সঙ্গও ছাড়তে হবে নাকি।
কবি। না, তার দরকার হবে না। আপনি যখন পলাতক তখন তো আমাদেরই দলে এসে পড়েছেন।
রাজা । তোমার দলে ?
কবি। হা মহারাজ, আমি জন্মপলাতক।
গান
আমরা বাস্তুছাড়ার দল,
ভবের পদ্মপাত্রে জল।
আমরা করছি টলমল ।
মোদের আসাযাওয়া শূন্য হাওয়া
নাইকো ফলাফল।
রাজা । তুমি আমাকে দলে টানতে চাও ? অতদূর এগোতে পারব না। আমাকে মন্ত্রীরা মিলে সভাছাড়া করেছে, তাই বলে কি কবির দলে ভিড়ে শেষে–
কবি। শুধু আমাকে দেখে ভয় পাবেন না,এ দলে আপনি রাজসঙ্গীও পাবেন।
রাজা । রাজসঙ্গী ? কে বলো তো।
কবি। ঋতুরাজ।
রাজা । ঋতুরাজ ? বসন্ত ?
কবি। হা মহারাজ। তিনি চিরপলাতক | আমারই মতো । পৃ্থী তাকে সিংহাসনে বসিয়ে পৃথ্বীপতি করতে চেয়েছিল কিন্তু তিনি–
রাজা । বুঝেছি, বোধ করি রাজকোষের অবস্থা দেখে পালাতে ইচ্ছে করছেন।
কবি। পৃথিবীর রাজকোষ পূর্ণ করে দিয়ে তিনি পালান।
রাজা । কী দুঃখে।
কবি। দুঃখে নয়, আনন্দে।
রাজা । কবি, তোমার হেয়ালি রাখো ; আমার অধ্যাপকের দল তোমার হেয়ালি শুনে রাগ করে, বলে ওগুলোর কোনো অর্থ নেই।
আজ বসন্ত-উৎসবে কী পালা তৈরি করেছ সেইটে বলো।
সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।