একটু চোখ বুলিয়ে নিন
এক
চণ্ীগড়ে শ্ঠণ্তী বহু প্রাটীন দেবতা। কিংবদন্তী আছে রাজা বীরবাহুর কোন্ এক
পূর্বপুরুষ কি একটা যুদ্ধ জয় করিয়া বারুই নদীর উপকূলে এই মন্দির স্থাপিত
করেন, এবং পরবর্তীকালে কেবল ইহাকেই আশ্রয় করিয়া এই চন্তীগড় গ্রামখানি
ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হইয়া উঠিয়াছিল। হয়ত একদিন যথার্থই সমস্ত চণ্তীগড় গ্রাম
দেবতার সম্পত্তি ছিল; কিন্তু আজ মন্দির-সংলগ্ন মাত্র কয়েক বিঘা ভূমি ভিন্ন
সমস্তই মানুষে ছিনাইয়া লইয়াছে। গ্রামখানি এখন বীজগাঁর জমিদারিভুক্ত। কেমন
করিয়া এবং কোন্ দুর্জেয় রহস্যময় পথে অনাথ ও অক্ষমের সম্পত্তি এবং এমনি
নিঃসহায় দেবতার ধন অবশেষে জমিদারের জঠরে আসিয়া স্কিতিলাভ করে, সে
কাহিনী সাধারণ পাঠকের জানা নি্প্রয়োজন। আমার বক্তব্যটা কেবল এই যে,
চণ্তীগড় গ্রামের অধিকাংশই এখন চন্তীর হস্তচ্যুত। দেবতার হয়ত ইহাতে যায়-
আসে না; কিন্তু তাঁহার সেবায়েত যাঁহারা, এ ক্ষোভ তাঁহাদের আজিও যায় নাই;
তাই আজিও বিবাদ-বিসংবাদ ঘটিতে ছাড়ে না এবং মাঝে মাঝে সেটা তুমুল হইয়া
উঠিবারই উপক্রম করে। অত্যাচারী বলিয়া বীজগাঁয়ের জমিদার-বংশের চিরদিনই
একটা অখ্যাতি আছে; কিন্তু বসর-খানেক পূর্বে অপুত্রক জমিদারের মৃত্যুতে
ছোট-বড় সকল প্রজার জীবনই একেবারে দুর্ভর হইয়া উঠিয়াছে। জনশ্র্তি এইরূপ
যে, ভূতপূর্ব ভূস্বামী কালীমোহনবাবু পর্যন্ত এই লোকটির উচ্ছৃঙখলতা আর সহিতে
না পারিয়া ইহাকে ত্যাগ করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন, কিন্তু আকস্মিক মৃত্যু
তাঁহার সে ইচ্ছাকে কার্ষে পরিণত করিতে দেয় নাই।
সেই জীবানন্দ চৌধুরী সম্প্রতি রাজ্য-পরিদর্শনচ্ছলে চস্ভীগড়ে আসিয়া উপস্থিত
হইয়াছেন। গ্রামের মধ্যে একটা সামান্য রকমের কাছারিবাড়ি বরাবরই আছে, কিন্তু
বাঁকুড়া জেলার এই অসমতল পাহাড়-ঘেষা গ্রামখানির স্বাস্থ্য সম্বন্ধে যথেষ্ট সুনাম
থাকায়, এবং বিশেষতঃ বালুময় বারুইয়ের জল অত্যন্ত রুচিকর বলিয়া এই