একটু চোখ বুলিয়ে নিন
এক
পশ্চিমের একটা বড় শহরে এই সময়টায় শীত পড়ি-পড়ি করিতেছিল। পরমহংস রামকৃষ্ণের একে চেলা কি একটা সৎকর্মের সাহায্যকল্লে ভিক্ষা সংগ্রহ করিতে
এই শহরে আসিয়া পড়িয়াছেন। তাহারই বক্তৃতা-সভায় উপেন্্রকে সভাপতি হইতে হইবে এবং তৎপদমর্যাদানুসারে যাহা কর্তব্য তাহারও অনুষ্ঠান করিতে
হইবে । এই প্রস্তাব লইয়া একদিন সকালবেলায় কলেজের ছাত্রের দল উপেন্দ্রকে ধরিয়া পড়িল ।
উপেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, সৎকর্মটা কি শুনি?
তাহারা কহিল, সেটা এখনো ঠিক জানা নাই। স্বামীজী বলিয়াছেন, ইহাই তিনি আহুত সভায় বিশদরূপে বুঝাইয়া বলিবেন এবং সভার আয়োজন ও প্রয়োজন
অনেকটা এইজন্যই।
উপেন্ত্র আর কোন প্রশ্ন না করিয়াই রাজী হইলেন। এটা তাহার অভ্যাস । বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগ্ডলি এতই ভাল করিয়া পাশ করিয়াছিলেন যে, ছাত্রমহলে
তাহার শ্রদ্ধা ও সম্মানের অবধি ছিল না। ইহা তিনি জানিতেন। তাই, কাজে-কর্মে, আপদে-বিপদে তাহারা যখনই আসিয়া পড়িয়াছে, তাহাদের আবেদন ও
ছেলেদের জিম্ন্যাস্টিকের আখড়া হইতে ফুটবল, ক্রিকেট ও ডিবেটিং ক্লাবের সেই উচ্ু স্থানটিতে গিয়া পূর্বের মত তাহাকে বসিতে হইত।
কিন্তু এই জায়গাটিতে শুধু চুপ করিয়া বসিয়া থাকা যায় না__কিছু বলা আবশ্যক । একজনের দিকে চাহিয়া বলিলেন, কিছু বলা চাই ত হে! সভাপতি সেজে
সভার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে একেবারে অজ্ঞ থাকা তা আমার কাছে ভাল ঠেকে না–কি বল তোমরা?
এ ত ঠিক কথা । কিন্তু তাহাদের কাহারো কিছুই জানা ছিল না। বাহিরের প্রাণের একধারে একটা প্রাচীন পুষ্পিত জবা বৃক্ষের তলায় এই ছেলের দলটি
যখন উপেন্দ্রকে মাঝখানে লইয়া সংসারের যাবতীয় সন্ভব-অসন্ভব সৎকর্মাবলীর তালিকা করিতে ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিল, তখন দিবাকরের ঘর হইতে একজন
নিঃশব্দে সকলের দৃষ্টি এড়াইয়া বাহির হইয়া আসিল । উপেন্দ্র দিবাকরের মামাতো ভাই । শিশু অবস্থায় দিবাকর মাতৃ-পিতৃহীন হইয়া মামার বাড়িতে মানুষ