একটু চোখ বুলিয়ে নিন
কে যেন দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে।
নিশাত কি-হোলে চোখ রাখল । কাউকে দেখা যাচ্ছে না। অথচ দরজায় ধাক্কা
পড়ছে। নিশাত বলল, কে? কোন উত্তর নেই। চাপা হাসির মত শব্দ। নিশাত দরজা
খুলল। আশ্চর্য কান্ড। এইটুকু একটা বাচ্চা। সবে দাঁড়াতে শিখেছে। তাও নিজে
নিজে নয়। কিছু একটা ধরে দাঁড়াতে হয়। দরজা ধরে দাঁড়িয়ে কেমন দুলছে। .
৪ খোকন তোমার কি নাম?
খোকন বিশাল একটা হাসি দিল। নীচের মাড়ির একটি মাত্র দাত। সেই দাত .
হাসির আভায় ঝিকঝিক করছে। নিশাত উচু গলায় জহিরকে ডাকল ও এই কাও দেখে
যাও।
৪ কি কাণ্ড?
৪ না দেখলে বুঝবে না। বিরাট এক অতিথি এসেছে
জহির গলায় টাই বাধছিল। আয়নার সামনে থেকে নড়া উচিত নয় তবু নড়ল
নিষ্প্রাণ গলায় বলল,
৪ এ কে?
8 পাশের বাসার। কি রকম অসাবধান মা দেখেছ? বাচ্চাটাকে ছেড়ে দিয়েছে।
যদি সিঁড়ির দিকে যেত?
জহির আয়নার সামনে চলে গেল। টাইয়ের নটে গোলমাল হয়ে গেছে। আবার
নতুন করে শুরু করতে হবে। সে নট ঠিক করতে করতে বলল, নিশাত বাচ্চাটাকে
ঘরে টুকিও না।
ঃ ঢুকাব না কেন?
ঃ বাচ্চাদের একটা অদ্ভুত নিয়ম আছে, সাজানো গোছানো ঘর দেখলেই এরা
| প্রাকৃতিক কর্মটি করে ফেলে। ও এক্ষুণি তা করে ফেলবে।
ঃ ফেলুক। এই থোকন ভেতরে আসবে ? টস্টু টুটু।
ঃ নতুন কেনা কার্পেট খেয়াল রেখো ।
নিশাত বলল, মা-টা কেমন দেখলে? একদম নেংটো বাবা করে রেখে দিয়েছে।
| একটা প্যান্ট পরাবে না?
) আয়নায় নিশাতের ছায়া পড়েছে। জহির অবাক হয়ে দেখল নিশাত বাচ্চাটার
লেখক সম্পর্কে
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকে’র মাধ্যমে আত্নপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগর জীবনের পটভূমিতেই তার অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহারণ ‘অচিনপুর’, ‘ফেরা’, মধ্যাহ্ন। মুক্তিযুদ্ধ বারবার তার লেখায় ফুঠে উটেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘১৯৭১’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নির্বাসন’ প্রভৃতি উপন্যাস। ‘গৌরিপুর জংশন’, ‘যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ’, চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক’ -এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে। ‘বাদশা নামদার’, ‘মাতাল হাওয়া’য় অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজরা ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে।