দি আদার সাইড অফ মী - সিডনি শেলডন (The Other Side of me By Sidney Sheldon)

দি আদার সাইড অফ মী – সিডনি শেলডন (The Other Side of me By Sidney Sheldon)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

জীবনের পড়ন্ত বেলায়

০১,

জীবনের পড়ন্ত বেলায় অনেক কিছু মনে পড়ে।

তখন আমি সতেরো বছরের কিশোর। চিকাগো শহরের এক ওষুধের দোকানে ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ করছি। এই কাজটা আমার খুবই ভালো লেগেছিল। কারণ আমি অনেকগুলো ঘুমের বড়ি সংগ্রহ করেছিলাম। আত্মহত্যা করব বলে। জানতাম না, কটা ট্যাবলেটের দরকার । হয়তো গোটা কুড়ি। হ্যাঁ, একটু একটু করে সংগ্রহ করছি, যাতে কারও নজরে না পড়ি।

আমি জানতাম, হুইস্কি এবং ঘ্বুমের ট্যাবলেট হল মারাত্মক সংমিশ্রণ। হ্যাঁ, তাদের মেশাতে হবে। কারণ আমি মরতে চাই!

শনিবার, আমি অপেক্ষা করছিলাম। আমি জানি, সপ্তাহের শেষে মা-বাবা বাড়িতে থাকবে না। আমার ভাই রিচার্ড, এক বন্ধুর বাড়িতে রাত কাটাবে । আমাদের অ্যাপার্টমেন্টটা থাকবে একেবারে ফাঁকা ।

সন্ধ্যা ছ টা, ফার্মাসিস্ট বললেন- এবার বন্ধ করতে হবে।

উনি জানতেন না, ওনার এই কথাটার মধ্যে একটা আলাদা অর্থ লুকিয়ে ছিল। হ্যাঁ, এবার সবকিছুই বন্ধ করতে হবে।

১৯৩৪- আমেরিকার ভাগ্যাকাশে দেখা দিয়েছে কালো মেঘ। স্টক মার্কেট, একটার পর একটা ব্যাঙ্ক দরজা বন্ধ করছে। ব্যবসায়ে দেখা দিয়েছে মন্দা। এক কোটি তিরিশ লক্ষ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। তখন তারা বেপরোয়া । দশ লক্ষ ভবঘুরে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। দু-লক্ষ শিশুর মুখে অন্ন নেই। হ্যাঁ, আমরা সাংঘাতিক অর্থনৈতিক অবনতির
মোকাবিলা করছি। আগে যাঁরা ছিলেন কোটিপতি তাঁদের অনেকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন, বিখ্যাত আধিকারিকরা পথেঘাটে আপেল বিক্রি করছেন।

তখনকার সবথেকে জনপ্রিয় গান ছিল বিষন্ন রবিবার !

হ্যাঁ, এই জগতটা একেবারে অন্ধকার। আমি হতাশার প্রান্তসীমায় পৌঁছে গেছি। জীবনের কোনো ছন্দ খুঁজে পাচ্ছি না।

আমরা লেক মিশিগানে থাকতাম, সমুদ্র থেকে কয়েক কদম দূরে । একরাতে আমি সেখানে চলে গিয়েছিলাম। সে এক পাগল হাওয়ার ডাক, আকাশে মেঘের ওড়াওড়ি। আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম- যদি ঈশ্বর বলে কিছু থেকে থাকে, তাহলে আমাকে আলো দেখাও ।

হঠাৎ আমি দেখলাম, মেঘেরা একটা সুন্দর মুখচ্ছবি তৈরি করেছে। বিদ্যুৎ রেখা । আমার চোখ ধাঁধিয়ে গেল। ভয়ে আমি বাড়িতে পালিয়ে এলাম ।

রজারস পার্কের তিনতলার ছোট্ট ত্যাপার্টমেন্টে পরিবারের সঙ্গে বাস করতাম। সেখানে দিনগুলো কোনোরকমে কেটে যেত।

শেষ অব্দি আমি আমার ওই ভয়ংকর অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে এলাম । একেবারে ফাঁকা । মা-বাবা বেরিয়ে গেছে। ভাইও নেই। আমার পরিকল্পনার অন্তরায় বলতে কেউ নেই।

আমি ছোট্ট বেডরুমে গেলাম। রিচার্ড আর আমি সেখানে থাকি। ড্রয়ারের ভেতর ঘুমের ট্যাবলেট লুকোনো ছিল। আমি কিচেনে গেলাম। সেলফ থেকে জলের বোতল বের করলাম। আবার তাকালাম ট্যাবলেটগুলোর দিকে । হ্যাঁ, এবার কাজটা শুরু করতে হবে। হুইস্কি খেয়ে ফেললাম, গলা বুজে এল । তারপর? কয়েকটা ঘুমের ট্যাবলেট । কে যেন বলল, তুমি কী করছ?

আমি চারদিকে তাকালাম- হ্যাঁ, বাবা দাঁড়িয়ে আছে। বেশ, তুমি মদ খাচ্ছো?

আমি অবাক- আমি ভেবেছি তুমি চলে গেছে।

-একটা জিনিস ভুলে গিয়েছিলাম । বাবা ছুটে এল। আমার হাত থেকে হুইস্কির বোতলটা নিয়ে নিল।

আমার মন বলার চেষ্টা করছে, কিছুই না।

বাবা রেগে গেছে- সিডনি, কী হয়েছে?

বাবা ঘুমের ট্যাবলেটগুলো দেখল, কী হচ্ছে? এগুলো কেন?

আমি শান্তভাবে বলেছিলাম আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না।

কিছুক্ষণের নীরবতা ।

বাবা বলল- তুমি এত বিষঃ কেন?

তুমি আমাকে বাধা দিতে পারবে না। আজ অথবা কাল আমি আত্মহত্যা করবই।

বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বলল- এটা তোমার জীবন, যা খুশি করতে পারো । চল, আমরা একটু বেড়িয়ে আসি।

আমি জানি না, বাবা কী ভাবছে। আমার বাবা একজন সেলসম্যান। সে হয়তো আমার মন পাল্টাবার চেষ্টা করছে।

আমি বললাম ঠিক আছে, চলো।

-কোটটা পরে নাও, ঠান্ডা লাগিয়ে কী লাভ?

সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top