একটু চোখ বুলিয়ে নিন
এ-বাড়িতে রাতের খাওয়ার টেবিলের জমায়েতটাই সবচেয়ে উপভোগ্য ব্যাপার। বিশ্বদেব এবং তার স্ত্রী, তাদের দুই ছেলে নভোজিৎ এবং চন্দ্রজিৎ, এক বউমা শর্মিলা, এক মেয়ে স্বস্তি, সবাই জড়ো হয় এ সময়ে। টেবিলটা এত বড় নয় বলে সবাই একসঙ্গে খেতে বসে না। দুই ছেলেকে নিয়ে বিশ্বদেব বসে, আর কখনো কখনো ছেলেদের চাপাচাপিতে তাদের মাও। শর্মিলা আর স্বস্তি প্রায়ই দেরিতে একসঙ্গে খায়। দুজনে খুব ভাব। আপাতত তারা পরিবেশন তদারকি করছে। প্রকাশ তেওয়ারি এ-বাড়ির রান্নার লোক, ফর্সা, মধ্যবয়সী সুদর্শন পুরুষ। সে বিশ্বদেবের অফিসেও হেড বেয়ারার চাকরি করে। এ-বাড়িতে রান্নার বিনিময়ে সে মাসে হাজার টাকা, খোরাক এবং গ্যারেজের ওপরে মেজেনাইন ফ্লোরে থাকার জায়গা ক্ে্টিছে। বিশ্বদেবের বড় মেয়ে শ্রাবন্তীর বিয়ে হয়ে গেছে। সে দিতে থাকে। নভোজিৎ অত্যন্ত কৃতবিদ্য ডাক্তার। সে এফ আর সি তিবং এই শহরে তার জন্যই বিশ্বদেব একটা বড় এবং অত্যাধুনিকর্্মসিং হোম খুলেছে। এত ভাল নার্সিং হোম আশেপাশে কোনো! চহিরেই নেই। চন্দ্রজিৎও ডাক্তার, সবে পাশ করে এখন কলকাতা মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন। টার্ম শেষ হলে বিদেশে যাওয়ার প্ল্যান আটছে। সে কয়েকদিনের ছুটিতে এসেছে। কনক্টাকশন থেকে সে কাঠের ব্যবসা শুরু করে। তারপরে একটি টিকপ্রাই তৈরির কারখানাও। সে এই মফস্বল শহরের মিউনিসিপ্যালিটির
লেখক সম্পর্কে
জন্ম ২ নভেম্বর, ১৯৩৫ ।
দেশ__ঢাকা জেলার বিক্রমপুর ৷ মোক্তার দাদু আইন ব্যবসা জমাতে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহে । সেখানে ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে জন্ম । শৈশব কেটেছে নানা জায়গায় । পিতা রেলের চাকুরে | সেই সূত্রে এক যাযাবর জীবন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায় । এরপর বিহার, উত্তরবাংলা, পূর্ববাংলা, আসাম ।
পঞ্চাশ দশকের গোড়ায় কুচবিহার | মিশনারি স্কুল ও বোর্ডি-এর জীবন | ভিকটোরিয়া কলেজ থেকে আই-এ । কলকাতার কলেজ থেকে বি এ। স্নাতকোত্তর পড়াশুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে । স্কুল-শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু | এখন বৃত্তি-সাংবাদিকতা । আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত । ছাত্রজীবনের ম্যাগাজিনের গণ্ডী পেরিয়ে প্রথম গল্প-দেশ পাত্রকায় । প্রথম উপন্যাস “ঘুণপোকা? । “দেশ’ শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত | প্রথম কিশোর উপন্যাস__“মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ । কিশোর সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে ১৯৮৫ সালে পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার । ১৯৮৯ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদমি পুরস্কার । আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দুবার ।
খেলায় তাঁর উৎসাহ অদম্য । বকসিং, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস সম্পর্কে যেমন, আযাথলিটক্সেও তেমনই আগ্রহী । জীবনের এক সংকটময় মুহুর্তে তিনি
জীবনের প্রতি আস্থা ফিরে পান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সান্নিধ্যে এসে | নিরামিষাশী । ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য । তাঁর রচনাতেও ঘুরে-ফিরে আসে আধ্যাত্মিক অন্বেষণ । পাঠক হিসেবে সর্বপ্রাসী | ধর্মবিষয়ক গ্রন্থ প্রিয়, প্রিয় গ্রিলার এবং কল্পবিজ্ঞানও ।