Moynagorer Brittanto by Shirshendu Mukhopadhyay

ময়নাগড়ের বৃত্তান্ত – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Moynagorer Brittanto by Shirshendu Mukhopadhyay)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

পৌষ মাসের এই সকালবেলায় ময়নাগড়ে অখণ্ড শাস্তি বিরাজ করছে। রোদ এখনও ভাল করে ওঠেনি, চারদিকে বেশ জন্পেশ বুয়াশাও জমে আছে। রাঙা রোদ অবশা
কুয়াশাকে ছড়ো দিয়ে তাড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে। তাই একট একটু রাঙা আলো ফুটে উঠছে চারধারে। আর সেই আলোয় দেখা যাচ্ছে পশুপতিবাবু তার বারান্দায়
দাড়িয়ে দাতন করছেন। এই দাতন করার সময়টায় তার মুখে একটা স্বগীয় আনন্দ ফুটে ওঠে। তিনি লোককে প্রায়ই বলেন, “াতন করার সময় আমার ভারী একটা দিবাভাব আসো মনে হয় যেন বাতাসের উপর হাটছি, অনেক অলৌকিক দশা দেখতে পাচ্ছি, অনেক অলৌকিক শব্দ শুনতে পাচ্ছি।”

একটু পশ্চিমধারে নিজেদের বাড়ির উঠোনে গদাধর এইমাত্র পাঁচশো ডন শেষ করে পাচশো বৈঠক দিতে শুরু করেছে। তার হুপহাপ শব্দে বাতাস কাপছে গদাধরও বলে, ডন-বৈঠক-মুগুর তাঁজার সময় সে নাকি আর গাদাধর থাকে না। তার শরারে নাকি অনা কিছু একটার ভর হয়। বাহ্য চৈতন্য থাকে না বলেই বোধহয় মাসখানেক আগে এক ভোরবেলায় চোর এসে তার সাইকেলখানা চোখের উপর দিয়েই চুরি করে নিয়ে গেল। গদাধর দেখেও দেখতে পায়নি।

_ খানার সেপাই রামশরণ হনুমানজির মন্দিরে পুজো চড়িয়ে ভজন গাইছে। মন্দিরটা অবশ্য একেবারেই বেটে বকেশর। মাত্র হাততিনেক উচু, বড়জোর দু’হাত লম্বা আর
আড়াই হাত চগুড়া। ভিতরে অঙ্গষ্টপ্রমাণ একটা মুর্ভিও আছে। তবে তেল-সিদুর, শ্যাওলা আর ময়লায় মুর্তির মুখচোখ কিছু বোঝবার উপায় নেই। কিন্তু রায়শরণ লজ সকালে বিভোর হে যু গা গে রি হনুমানজির উপর তার ভক্তির কারণ আছে। সময়টা রামশরণের খারার্পত্ক্ছে। তার মবটকে নিরবে দিয়েছ তার হলে লিউ যে তি ক্লাস সিক্সে ফেল মেরেছে। হেড কনস্টেবল হরিপদ সাম্ব্র্ম্টে্ রিটায়ার হওয়ার ই ছে পরের মর ক, লি হেই ওই পোস্টে বড়বাবু রেকমেন্ড করেছেন।

লেখক সম্পর্কে

জন্ম ২ নভেম্বর, ১৯৩৫ ।

দেশ__ঢাকা জেলার বিক্রমপুর ৷ মোক্তার দাদু আইন ব্যবসা জমাতে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহে । সেখানে ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে জন্ম । শৈশব কেটেছে নানা জায়গায় । পিতা রেলের চাকুরে | সেই সূত্রে এক যাযাবর জীবন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায় । এরপর বিহার, উত্তরবাংলা, পূর্ববাংলা, আসাম ।

পঞ্চাশ দশকের গোড়ায় কুচবিহার | মিশনারি স্কুল ও বোর্ডি-এর জীবন | ভিকটোরিয়া কলেজ থেকে আই-এ । কলকাতার কলেজ থেকে বি এ। স্নাতকোত্তর পড়াশুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে । স্কুল-শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু | এখন বৃত্তি-সাংবাদিকতা । আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত । ছাত্রজীবনের ম্যাগাজিনের গণ্ডী পেরিয়ে প্রথম গল্প-দেশ পাত্রকায় । প্রথম উপন্যাস “ঘুণপোকা? । “দেশ’ শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত | প্রথম কিশোর উপন্যাস__“মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ । কিশোর সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে ১৯৮৫ সালে পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার । ১৯৮৯ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদমি পুরস্কার । আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দুবার ।
খেলায় তাঁর উৎসাহ অদম্য । বকসিং, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস সম্পর্কে যেমন, আযাথলিটক্‌সেও তেমনই আগ্রহী । জীবনের এক সংকটময় মুহুর্তে তিনি
জীবনের প্রতি আস্থা ফিরে পান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সান্নিধ্যে এসে | নিরামিষাশী । ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য । তাঁর রচনাতেও ঘুরে-ফিরে আসে আধ্যাত্মিক অন্বেষণ । পাঠক হিসেবে সর্বপ্রাসী | ধর্মবিষয়ক গ্রন্থ প্রিয়, প্রিয় গ্রিলার এবং কল্পবিজ্ঞানও ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top